সংসারের কাজ করেও ছোট বাচ্চা নিয়ে কিভাবে ইউটিউবিং করেছি ? অনেকেই প্রশ্ন করেছেন।
বাচ্চা সামলানো নিয়ে আমার কিছু বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করেছি তার মধ্যে আমার প্রিয় একটা লাইন
“আমি কখনো বাচ্চাকে বদলাতে চাইনি। মা হবার পর প্রত্যেকটা ধাপে আমি নিজেকে বদলে ফেলেছি।”
পুরা আর্টিকেল পড়তে ক্লিক করতে পারেন
এই লাইন থেকেই ব্যাখ্যা করি। আমি কিছুটা পিছন থেকেই বলি। বাবু যখন সবে হাঁটা শিখেছে তার মানে তাকে আর আটকানোর জো নাই।
একা রান্না করা ,নিজের প্রাকৃতিক কাজ সময় দেওয়া খুবই চিন্তার বিষয় কারণ এই সময়টাতে না কোন অঘটন করে ফেলে।
তাই আমি আমাকে সময়ের সাথে সাথে নিজেকে কিছুটা পরিবর্তন করেছি।
বি: দ্রঃ আমি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ নই। সময়ের সাথে শেখার চেষ্টা করেছি। আর মা হবার আগ্রহ থেকেই জেনেছি ,পড়েছি কাজ করেছি। আমি ভুলের উর্ধে নই।
কিছুটা উদাহরণ দেই।
১. ঘরের সমস্ত ইলেকট্রিক সুইচ গুলি যা সে হাতের কাছেই পাবে সহজে, তা কস্টেপ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি।
২. আমাদের ঘরের কম্পিউটারের মাদারবোর্ড নিচ্ থেকে দেয়ালে সেট করেছি।
৩. প্রথম যে বাসায় থাকতাম মেঝেতে একটা দুইটা প্লাস্টার উঠানো ছিল , ওই যায়গায় গুতা দিয়ে মুখে দেয় তাই পুরা বেডরুমে একটা বড় সাইজের মাদুর বিছিয়ে দিয়েছিলাম।
৪. ব্লেড ,বটি ,রেজার এমন কিছু ছোট খাট জিনিসগুলি একদম লুকিয়ে রেখেছিলাম।
৫. খেয়াল করলাম তার আগ্রহটা কোথায় ? বাইসাইকেল ভীষণ পছন্দ করে
তাই তখন কেমন সাইকেল ধরে ধাক্কা দিতে পারে তখনি তাকে একটা সাইকেল কিনে দেওয়া হলো। অনেকটা সময় এইটাতেই পাস করে কিছুদিনের মধ্যে এক্সপার্ট হয়ে গেল।
৬. শুধু ড্রেসিং টেবিলে উঠে ,এইটাও রিস্কি ছিল। তাই ঘর থেকে এইটা আউট করে দিলাম।
সেই ফ্ল্যাটের নিচ্ তলায় এক ভাবি থাকত উনার সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল তার মেয়েকে উপহার দিলাম সেই ড্রেসিং টেবিল। তার বদলে ওয়ালে হ্যাঙ্গিং একটা গ্লাস কিনলাম।
৭. মা হবার আগে খাওয়া গোছলে অনেক সময় লাগত। ও অভ্যাস পরিবর্তন করলাম।
তবে এখানে একটা কথা আছে, ধরেন আপনি মনের সুখে গান গাওয়া আর গোছল করা অভ্যাস,
মা হবার পর এই পরিবর্তন আনতে চাইলে গান যদি না গাইতে পারেন তখন বাচ্চার প্রতি একটা ক্ষোভ জমতে পারে।
এমনটা করা যাবে না। আমি দশ মিনিটের গোছল কিভাবে দুই মিনিটে করতে পারি সেটাও আবার নিজের আবেগকে প্রাধান্য দিয়ে সেটা জেনেই সংক্ষিপ্ত করেছি।
যাতে বাচ্চার প্রতি কোন রাগ না আসে।
এমন আরো অনেক কিছু ছোট খাট পরিবর্তন ঘরের মধ্যে আনার ফলে অন্তত বাথরুমে গোছল করার সময় একটা নিচ্ছয়তা কাজ করেছিল যে , বাচ্চা কোন বিপদ ঘটাবে না।
তাহলে এখন প্রশ্ন আসতে পারে এইসব করেই কি সব কিছু সহজেই করতে পেরেছি ? আমার উত্তর হবে না। আরো কিছু বিষয় ছিল সাথে।
তবে হ্যা , অনেকের কাছে যখন হাঁপিয়ে উঠার গল্প শুনি তখন মনে হয় ,না কিছুটা বুজি আমি ইতিবাচকভাবে স্বস্থির ম্যানেজমেন্ট সফল হয়েছি।
বাবু ঘুমিয়ে গেলে আমি ভিডিও এডিড করেছি। সাউন্ড দিয়েছি রাতে যখন সাহেব বাসায় আসতো ওকে নিয়ে নিচে হাঁটতে যেত।
অথবা বাসায় কেউ নাই , ওকে ঘুম পাড়িয়ে পাশের রুমে গিয়ে সাউন্ড দিয়েছি।
তারপরেও কিছু বাস্তবতা
আমার ভিডিও কোয়ালিটি একদম ভালো ছিল না , আমি যেমন কন্টেন্ট বানাতে চাইতাম, তা সময়ের সাথে সংসারের কাজ এ _ টু জেড করে সম্ভব নয় ,তাই শুধুই ভিডিও হয়েছে ভালো কিছুই হয়নি ,সরিষা সমান হয়ত উন্নত হয়েছে ইদানিং কারণ সে এখন বুজতে পারে।
সাথে ছিল প্রচুর ধৈর্য আর সন্তানের প্রতি ভালোবাসা।
কিছু কথা আমার একদম ব্যক্তিগত
বাচ্চা তখনি বিরক্ত হয় বা মাকে বিরক্ত করে যখন সে যা চায় পরিবারের মানুষ তা বুজতে পারে না।
ছোট বাচ্চা সেও বুজিয়ে বলতে পারে না। তাই আমাদের অভিভাবকের উচিৎ বাচ্চাকে বুজতে পারা।
কখন কি চাইছে ? কি পছন্দ করছে ? আগ্রহটা ঠিক কোথায় গ্রো হচ্ছে ?
প্রত্যেকটা বাচ্চার ব্যক্তিত্ব আলাদা ,তাই এই বিষয়টা একজন মাকেই খেয়াল রাখতে হয়।
তাহলে তাদের ম্যানেজ করা কিছুটা সহজ হবে। আমি যত বাচ্চা দেখেছি একদম এর ব্যাতিক্রম কিছুই ঘটেনি ,তাঁরা বাবা মার্ সঙ্গ ভীষণ চায়।
আমাদের ব্যর্থতা ঠিক এই যায়গায় মনে হয় কিছুটা ঘটে যায়।
যার খেসারত আমাদের নিজেদের গণনা করতে হয়।
আপু পেয়েছি আপনার লিংক। আমি আগেও আপনার লেখা পড়েছি। ভালো লাগলো। অনেকের উপকার হবে।
ধন্যবাদ আপু।