মানুসিক চাপ থেকে মুক্তি কিভাবে পেয়েছিলাম। এইবার বলি , কিভাবে এই জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছি ? প্রথম আর দ্বিতীয় পর্বে যা বলেছি তা , সম্পূর্ণ ছিল নেতিবাচক চিন্তার কারন। আসলে আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না ,
নেতিবাচক চিন্তা কতটা খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
মানুষের মনে ক্ষোভ , রাগ , হতাশা এই বিষয় গুলি একদিনে সৃষ্টি হয় না। অথবা বলতে পারেন হটাৎ কোনো কিছুই হয়। আমরা যা দেখি বা যা ঘটতে দেখি , তা হলো মনের মধ্যে একটু একটু করে করে জমে থাকা বিষ।
এই বিষ যত দিন মনের মধ্যে প্রশ্রয় দেয়া যাবে , এর ক্ষতির তীব্রতা বাড়তেই থাকবে। আর বিষ গুলো হলো নেতিবাচক চিন্তা মনের মধ্যে যায়গা দেয়া।
আমি মোটেও লেখিকা নই। তাই লেখা অগোছালো হতে পারে। কিন্তু এর বাস্তবতা এবং আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা তুলে ধরলাম।
শারীরিক কষ্ট কোনো কষ্টই নয় , যদি মানুষিক ভাবে ভালো থাকা যায়। আমি সেখানেই হেরে গেছিলাম নিজের কাছে।
প্রথম চিন্তাটা হলো। এইভাবে আর চলতে পারে না। আমি নিজেকে আঘাত করেও দেখেছি। কারো মনোযোগ পাইনি।
পড়াশুনা , পড়াশুনা ,পড়াশুনা করা :
আমি অনেক আর্টিকেল পড়লাম। কিভাবে বের হয়ে আসতে পারবো। যে সমাধান পেলাম তা অনেক গুলো বিষয়। আমার পরিবেশ এর সাথে যাবে না।
আবার কিছু লেখা পড়ে আমি অনেক বেশি ইতিবাচক চিন্তা করলাম।
তার মধ্যে যে বিষয়টা আমাকে ভীষণ ভাবিয়ে তুলেছে ,তা হলো অনেক বড় বড় মানুষ অনেকেই এক সময় এই হতাশায় ভুগতো। এখান থেকে বেরিয়ে ওনারা আজ ওয়েল স্ট্যাব্লিশ। বিশ্বের কাছে সুপরিচিত। ভাবতেই ভালো লাগলো আমার জন্য বের হয়ে আশাটা কঠিন কিছু নয়। আমি পারবো , যা অনেকেই পেরেছে।
কৃতজ্ঞতা বোধ :
নিজের মনের মধ্যে সৃষ্টি করলাম কৃতজ্ঞতা। আমি গুনতে শুরু করলাম যা পেয়েছি বা যা পাশ্চি তার জন্য আমি অনেক সৌভাগ্যবতি।
কি কি পেলাম তার একটা লিস্ট গুনতে থাকি। যার সাথে এতো ক্ষোভ তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা কঠিন। তাই প্রতিদিন ভাবি , আমি কি পেলাম তার কাছে।
মন থেকে মুছে ফেললাম কি পেলাম না। আমাকে একটা ঘর দিছে থাকার জন্য। দুবেলা দুমুঠো খেতে পারি।
সবছে বড় যে চিন্তা মাথায় কাজ করেছে তা হলো সামাজিক সিকিউরিটি। সে আমাকে সেই নিরাপত্তা দিয়েছে যা আমি কিনতে পারবো না।
দায়িত্ববোধ :
আমার সন্তান কিংবা আমার জীবন। দুইটাই আমার দায়িত্ব। যাদের কাছে সাহায্য পেয়ে যাচ্ছি তা সব কিছুই আল্লাহর রহমত ছাড়া কিছুই না।
আমার ভালো থাকা বা ভাবতে পারেন কিভাবে ভালো থাকবো ? এইসব কিছুর চিন্তা ভাবনা আমাকেই ভাবতে হবে।
তাই নিজে নিজে এইসব নেতিবাচক চিন্তা মাথা থেকে ফেলে দিলাম। আমার দায়িত্ব আমি নিজেই নিতে শুরু করলাম। কিভাবে ? যে কাজ গুলো আমাকে ভালো রাখে।
যা করলে আমি ভালো থাকবো সে কাজ গুলোর লিস্ট করলাম। সেগুলি করি প্রতিদিন কিছু না কিছু। সময়ের সাথে দৌড়াতে থাকলাম।
প্রতিটা মুহুর্থ গণনা করি। কিভাবে কি করছি? নিজের দায়িত্ব নেয়া বিষয়টা মোটেও ছোট নয়। কেন বললাম এই কথা ?
ভালো থাকা মানে হলো নিজের যত্ন নেওয়া। আমি পুরোপুরি ব্যস্ত হয়ে গেলাম নিজেকে নিয়ে। নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে। হেলথি খাবারের দিকে লক্ষ রেখেছি।
নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিয়েছি। কারো সামনে নিজেকে সুন্দুরী প্রকাশ করার জন্য নয়। মানুষিক ভাবে নিজেকে ভালো রাখার জন্য।
আমার ব্যস্ততাই মনে হয় আমাকে ভালো রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করেছে। আমার সন্তানের দায়িত্ব সম্পূর্ণ আমার। ওর যত্ন নেওয়া আমার।
বুজতে পারেন আমার দিন কিভাবে কাটতো ? সংসারের সব কাজ করে , নিজের যত্ন নেওয়া। আবার ২/৩ মাসের একটা বাচ্ছাকে একাই দেখা।
আমি অনেক ব্যস্ত থাকি। যা আমাকে সুখ দিতো। ভালো থাকতে সাহায্য করতো।
ইবাদত করা :
এই পয়েন্টটা প্রথমে আমাকে লিখতে হতো। আপনারা অনেকে ভাবতে পারেন গতানুগতিক কথা। কিন্তু চরম বাস্তব আর সত্য কথা হলো।
একমাত্র আল্লাহই পারেন আপনাকে আমাকে এবং সবাইকে ভালো রাখতে। ইবাদতের কাজটা নিয়মিত করেছি। বিশ্বাস করছি এবং ভরসা রাখছি।
আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আমাকে কেউ ভালো রাখার ক্ষমতা রাখে না।
সাহায্য নেওয়া :
খুবি গুরুত্ব পূর্ণ আর একটা বিষয় হলো সাহায্য নেওয়া। এই পুরা জার্নিতে আমি কারো কাছে, কোনো রকম সাহায্য চাইনি।
যেখানে গেলে মনে হয়েছে আমি একটু ভালো থাকবো চলে গেছি। যা খেতে ভালো লাগবে মনে হয়েছে খেয়েছি। কিন্তু কারো সাথে শেয়ার করিনি আমার ভিতরের মানুসিক চাপ।
আমি যেদিন নিজেকে ভালো রাখতে পেরেছি সেদিন আমার কাছের মানুষ এর সাথে গল্প করেছি। একটা কথা মনে হয়েছে আমার কাছে।
যদি বাপের বাড়ির কাউকে বলি তাহলে তারা আমার জন্য কষ্টে থাকবে।
যদি শশুর বাড়ির কাউকে বলি তাহলে আমি ওদের কাছে ইতিবাচক সাড়া পাবো। এইটা আমি আশাও করিনা। কারন ওদের সন্তান, মায়া কি আমার জন্য বেশি হবে? সাধারন হিসাব।
[…] তৃতীয় পর্ব […]