জিরো থেকে এক বছর শিশুর যত্ন

বাচ্চাদের ডায়াপার/প্যাম্পারস পরানো কি খুবেই দরকার ?

বাচ্চাদের ডায়াপার
বাচ্চাদের ডায়াপার

বাচ্চাদের ডায়াপার কি পরাইতে হবে ? আমি চাই আমার বাচ্চা প্রাকৃতিক ভাবেই বেড়ে উঠুক। হয়তো আমি ১০০% দিতে পারবো না , সেই চিন্তা করে পারসেন্টেন্স জিরো তে আসবে তা কখনোই  সম্বব নয়। তাই আমার বাচ্চাকে ন্যাচারালি  বড় করতে অনেক গুলো বিষয়ের মধ্যে ডায়াপার না পরানোর সিদ্ধান্ত অন্যতম একটি। তবে একটা কথা বলে নেই  । মাঝে মাঝে এমন কিছু প্রয়োজন সামনে এসে পরে তখন আমাদের ঘরের বাইরে বের হতেই হয়। তখন ২/৩ ঘন্টার জন্য ভালো মানের ডায়াপার পরাতেই পারেন। আমি শুধু ২৪ ঘন্টা ডায়াপার পরানোর বিরুদ্ধে বলছি। আমি শুধুমাত্র যখন বাসার বাইরে যাই তখন পরাই।  চেষ্টা নয় আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল , ইমার্জেন্সি ছাড়া আমি বাইরে বের হই না। যেখানে মানুষ ২৪ ঘন্টাই ডায়াপার পরাচ্ছে সেখানে আমি কেন না পরানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। তার কারন গুলো নিচে লিখে দিলাম।

১. মোটেও উপকারী নয়

ডায়াপার কিন্তু শিশুর জন্য বিশেষ উপকারী নয়৷ উল্টা অনেক ক্ষতিকর দিক আছে।

২. আর্থিক ক্ষতি

শিশুর ডায়াপার কিন্তু মোটেও দাম কম নয়। হিসি করা শেখার আগ পর্যন্ত অধিকাংশ শিশুর গড়ে দুই থেকে তিন হাজার ডায়াপার ব্যবহার করতে হয়৷ তাহলে হিসাব করে দেখেন কত টাকা খরচ করতে হবে।

৩.শক্তিশালী মায়ার বন্ধন সৃষ্টি

শিশুরা কাঁদার মাধ্যমেই মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। প্রসাবের উপর বাবুরা কখনোই থাকতে চায় না। তাই যখনি প্রসাব করে তখনি কাঁদে। সে চায় মা তাকে পরিষ্কার করে দিক। যখনি আসবেন পরিষ্কার করতে বাবু হাসবে লক্ষ করবেন। সে খুব খুশি হয় মাকে কাছে পেয়ে। এতে করে মা আর সন্তানের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন তৈরী হয়। একটা শিশু দিনে যদি ১০/১৫ বার হিসি করে তাহলে ভাবেন মায়ার বাঁধন এর পরিমান কতটুকু হবে। মায়া-মহব্বত ছাড়া কোনো সম্পর্কই কখনোই শক্ত হয় না।

৪.বাচ্চার থেকে দূরে থাকা

ডায়াপার পরানো মানে একটা দীর্ঘ সময় নিশ্চিন্তে থাকা নয়, আমার কাছে মনে হয় একটা দীর্ঘ সময় বাবুর কাছ থেকে দূরে থাকা। যা ভবিষ্যতে খারাপ ফলাফলেই আমাকে ফিরিয়ে দেবে। আমি নিজেকে দিয়ে চিন্তা করি ,কার ভালো লাগে ৬/৭ ঘন্টা টানা একটা পলিথিন পরে থাকতে।

৫.ডায়াপার র‍্যাশের প্রবনতায় আক্রান্ত হয়

শিশুর মুত্র তার মলের জীবানুর সাথে যখন  মেশে তখন তা অ্যামোনিয়া তে রুপ নেয় যা কিনা ত্বকের জন্য খুব কঠিন হয়ে উঠতে পারে। এ কারনে যেসব শিশুদের ঘনঘন পেটের সমস্যা হয় বুজতে হবে ডায়াপার র‍্যাশের প্রবনতায় আক্রান্ত হয়। বুজতেই পারছেন মলের সাথে মূত্রের মিশে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়।  বাচ্চারা তো কিছু বলতে পারে না কখন পায়খানা করলো।

৬.হতে পারে অ্যালার্জি

ডায়াপার-জনিত র‌্যাশ বা অ্যালার্জি, হতে পারে । ডায়াপারে ঢাকা অংশটুকু কখনো লাল, ফোলা ফোলা বা দানাদার দেখা গেলে এবং সেখানে ছোঁয়া লাগলে ব্যথায় শিশু কেঁদে উঠে  শুধু মাত্র ডায়াপার র‌্যাশ এর কারনে ।

৭.ব্যাকটেরিয়া বিস্তার লাভ করতে পারে

ডায়াপার পরানোর জায়গাটি গরম ও আর্দ্রতাপূর্ন থাকে – ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক এরকম জায়গাই বিস্তার লাভ করে।ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণ ত্বকের কোনো অংশে হলে তা ধীরে ধীরে ছড়াতে থাকে শরীরের অন্যান অংশে ।

একটা স্বাভাবিক কাজকে স্বাভাবিক ভাবে দেখলে অনেকটা সহজ হয়ে যায়। এই একেই কাজকে যখন কৃত্রিম করতে যাবো তখন অনেক ঝায় -ঝামেলা পোহাতে হয়। যেমন একজন মা প্রাকৃতিক ভাবেই শিখে যায় কিভাবে তাঁর বাচ্চাকে পায়খানা -প্রচাব পরিষ্কার করতে হবে। কিন্তু যখনি বিষয়টা একটু রেডিমেট করতে হয় ,তখনি প্রয়োজন হবে বেশি বেশী পড়াশোনার। যে পড়াশোনা আপনাকে জ্ঞান দিবে কিভাবে সঠিক ভাবে ডায়াপার পরাতে হবে। এর অনেক কারন আছে। যেমন , নিয়মিত ডায়াপার পরালে ,অনেক সময় শিশুর পায়ের ও কোমরের আশেপাশে দাগ হয়ে যেতে পারে ,জীবাণু যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য কি করতে হবে ,কোমরে ফুসকুড়ি উঠতে পারে ,উঠতে পারে বিভিন্ন ধরণের র‍্যাশ, র‍্যাশে কী করবেন? এইসব আরো অনেক বিষয়ে মাকে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে , না হলে বাচ্চার বিরাট ক্ষতি হতে পারে।

 

Add Comment

Click here to post a comment

ads