ডিপ ওয়ার্ক বইয়ের বাংলা রিভিউ। আমি চেষ্টা করেছি সংক্ষিপ্ত করে লিখতে এই বইয়ে কি আছে।
তবে অনুরোধ করব আপনারা বইটা পড়বেন। নিজে পড়লে এর গুরুত্ব বুজতে পারা যায়। Deep Work Book by Cal Newport .
বইটা লিখেছেন কল নিউপোর্ট
আমরা কখনো কি ভেবে দেখেছি।
আমাদের মতো সাধারণ মানুষ গুলির চেয়ে এক্সট্রা অর্ডিনারী মানুষ গুলির জীবন যাপন ,
রুচি আর চালচলনে অনেক কিছুই পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় কেন ।
তার মধ্যে একটা বিষয় হল দিনের একটা অংশ ,
অথবা সপ্তাহে অথবা মাসে তারা নিজেদের মত একা সময় কাটাতে পছন্দ করেন।
আমরা সাধারণ মানুষ গুলি এই বিষয়টাকে খুব সাধারণ ভাবেই দেখি।
অথবা বলতে পারেন নিজের জানালা দিয়ে দেখে বিচার করি। আমরা কিভাবে বিচার করি ?
এদের টাকা আছে তাই এমন যায়গায় বসে থাকে।
এদের তো কাজ নাই সংসারের ,কাজ সব কাজের লোকরাই করে তাই এদের টেনশন কম তাই এইভাবে সময় পাস করতে পারে।
অথবা জানালার সেই প্রস্থটা যদি ছোট হয় তাহলে ভাবি এরা ভাব নেয়।
আসলে তা মোটেও সঠিক নয়। এরা নিজেদের কাজটাকে আরো ভালোভাবে করার জন্য সংসার
আর দুনিয়ার সকল কিছু থেকে কিছু সময় নিজেদের গুটিয়ে রেখে শুধুমাত্র ওই কাজটাকে ফোকাস করে।
আর যত বড় বড় লেখক , সাংবাদিক , পন্ডিত ,গবেষক ,বিজ্ঞানী বা বিশ্বের ধনী লোক বলেন সবার মাঝেই এই গুন্ খুবেই কমন।
কিছু উদাহরণ দেই ধরেন কাজী নজরুল ইসলাম ,রবীন্দ্রনাথ ,হুমায়ন আহমেদ স্যার যখন লিখা লিখি করতেন ,
নিজেদের মত কোন নির্জন যায়গায় বসে লিখতেন। তখন কোন বিষয় উনাদের যেন মাথায় না থাকে মানে সব মনোযগ শুধুমাত্র লিখায় দিতেন।
লেখক এখানে এই বিষয়ের গুরুত্ব নিয়েই কথা বলেছেন। একে বলে ডিপ ওয়ার্ক। আর বর্তমানের সাথে খুব যুগপোযোগী একটা বই।
কারণ আমরা গভীর মনোযোগ দিয়ে কোন কাজেই করতে পারিনা। মোবাইলের রিং টোন ,ম্যাসেজ ,ইমেইল ,হোয়াটস এপ ,
টিকটিক আরো কত কিছু আমাদের সাধারণ জীবনের সাথে মিশে গেছে যে ,
সংসার আর স্বাভাবিক জীবন যাপনের সাথে তালমিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন হয়ে গেছে। তারউপর এখন সংসার গুলি ভেঙে ছোট হয়ে গেছে ,
সংসারের সকল কাজ কর্ম করেও নিজেকে একদম ফ্রী করা আমরা হয়ত ভাবতেই পারি না।
এই সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারি তার সম্পর্কে ডিটেলস লিখা আছে। এখানে কাজকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে
ডিপ ওয়ার্ক :
ডিপ ওয়ার্ক হল খুব মনযোগ দিয়ে একটা কাজ করা। এবং কাজের সময় নিজেকে সকল বিষয় থেকে দূরে রাখা। কোন চিন্তা ,দুশ্চিন্তা বা কোন দায় দায়িত্ব থেকে একদম মুক্ত রেখে কাজ করা।
শেলো ওয়ার্ক :
শেল ওয়ার্ক হলো একটা কাজের পাশাপাশি আরো কিছু কাজ একসাথে করা। যেমন খুব শুনতে শুনতে খাবার খাওয়া। রান্না করতে করতে গান শুনা ,
অন্যান্য কাজ করার সাথে সাথে টুং টাং শব্দ হতেই ম্যাসেজ বা ইমেইল চেক করা ইত্যাদি।
আসলে আপনি কোথাও ভালো করতে চাইলে সেটা হোক প্রফেশনাল লাইফ হোকনা পার্সোনাল লাইফ , ডিপ ওয়ার্কের কোন বিকল্প নেই।
এই কাজের জন্য ফোকাস থাকা খুবই দরকার। যেকোন কাজেই ফোকাস ছাড়া আপনি কিছুই আয়ত্তে আনতে পারবেন না।
এখন আমরা এই কাজের জন্য সময় কিভাবে বের করব বা করতে পারি লেখক এখানে ৪ টা উপায় বলেছেন
Monastic philosophy:
সন্ন্যাসীদের জীবন দেখেছেন ? এরা জীবনের সকল শেল ওয়ার্ক থেকে মুক্ত থাকে।
একটা যেখন বিষয়ে ধ্যান করে। নিজেদের বেশ শান্ত রাখতে পারে এই সমস্যায় জড়িত জীবন থেকেও।
আমরা দিনের একটা অংশ বের করে মেডিটেশন করতে পারি।
এতে করে আমাদের মন অনেক শান্ত হবে আমরা খুব মনোযোগ দিয়েই নিজের পছন্দের কাজে ফোকাস রাখতে পারব।
আর মেডিটেশন প্রমাণিত যে আমাদের শরীর এবং মনে এর প্রভাব ফেলে।
Bimodal Approach:
আমরা একটা যায়গা তৈরী করে নিতে পারি। যেমন যদি আর্থিক অবস্থা ভালো থাকে তাহলে একটা আলাদা বাড়ী বা ফার্ম হাউজ বানিয়ে নেন অথবা সপ্তাহে একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে নিজেকে নিজের মতো করে সময় দিতে পারি। এবং ততক্ষন আমি সেখানে থাকব যতক্ষন আমার কাজ শেষ না হয়।
এবং এই জায়গায় আমাকে কেউ বিরক্ত করতে আসবে না। আর যদি তা না হয় তাহলে নিজের বাড়িতেই একটা যায়গা সুন্দর করে রাখতে পারি
যেখানে আমি দিনের একটা সময় ডিপ ওয়ার্ক এর জন্য ব্যবহার করব। এবং সময় এমন বেঁচে নিব যেন কেউ আমাকে বিরক্ত করতে না পারে।
এমনটা তো খুব সহজেই হতে পারে।
Rhythmic Approach:
ওই বিষয়টা হলো নিজেকে ততদিন পর্যন্ত মনে করিয়ে দেওয়া যতদিন তা অভ্যাসে না পরিণত হয়।
দিনের যেকোন একটা সময় প্রতিদিন ডিপ ওয়ার্ক করা যাতে করে আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়। যখনি তা অভ্যাস হবে তখন আর এতো ভাবনা চিন্তা করতে হবে না। এর জন্য সকালের সময় সবচেয়ে উপযুক্ত
Journalistic Philosophy
এইটা সাধারণত লেখক যারা তারা করে থাকেন। উনারা খুব প্রবল ইচ্ছা শক্তি নিয়ে কাজ করেন তাই ২৪ ঘন্টার মধ্যে যেখন সময় ,
তাদের মনোযোগ গভীর করে লিখতে বসে যান। যখন যাই মনে হয় তারা দ্রুত নিজেদের ডিপ ওয়ার্কে মনোনিবেশ করেন।
এই চার্ নিয়মের যেকোন একটা অনুশীলন করে আমরা নিজেদের ডিপ ওয়ার্কে মনোযোগ দিতে পারি।
Add Comment