ইস্তেগফারের ফজিলত সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলাম। অনলাইনে অনেক ব্লগ পোস্ট পড়েছি , অনেক ইসলামী স্কলারের বক্তব্য শুনলাম। আলহামদুলিল্লাহ আমার মনটা সত্যি বলছি নরম হলো। এই সামান্য আমলে এত উপকার। আমি সহজে কিছু পড়ে বা শুনে অন্ধের মত অনুসরণ করিনা।
সেই বিষয়ে সহি হাদিস কি বলেছে , কোরআনের রেফারেঞ্চ থেকে পড়েও এর সত্যতা যাচাই করে তারপর তা বিশ্বাস করি। এর একটা সবচেয়ে বড় কারণ হলো , অনলাইনে আমলকারীর চেয়ে , উপদেশ দেবার মানুষ বেশি। সহি হাদিস ব্যাখ্যা কারির চেয়ে, নিজের মন গড়া হাদিস বলার মানুষেই বেশি। অনেক মিথ্যা প্রচারের মধ্যে সত্যিটা খুঁজে পাওয়া আসলেই অনেক কঠিন।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। আপনারা সুজুগ পেলে নয় , সুজুগ বের করে প্রতিদিন ইস্তেগফার করবেন। আমি এর ম্যাজিকের মত ফলাফল পেয়েছি।
ইস্তেগফারের কি?
ইস্তেগফার শব্দের অর্থ ক্ষমা চাওয়া, আর তাওবা হলো আল্লাহর পথে ফিরে আসা। তওবার পারিভাষিক অর্থ হলো লজ্জিত হওয়া। অর্থাৎ স্বীয় কৃতকর্মে লজ্জিত হয়ে সঠিক পথে ফিরে আসা। তওবার জন্য করণীয় হলো, স্বীয় কৃতকর্মের প্রতি লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া, সেই অপরাধ আর না করার দৃঢ় প্রত্যয় ও সংকল্প গ্রহণ করা এবং নেক আমলের প্রতি বেশিমাত্রায় মনোযোগী হওয়া।
ইস্তেগফারের ফজিলত
ইস্তেগফারের ফজিলত অনেক আছে। আমি এর থেকে বাচাই করে কয়েকটা উল্লেখ করলাম। এর কারণ হলো যদি একটা ছোট দোয়া একেই সাথে দুনিয়া আর আখেরাত আমার উপকারে আসে তাহলে আর বেশি কিছু জেনে কি হবে আমার।
- গুনাহ মাফ হয়ে যায়
- বিপদ দূর হয়
- দুশ্চিন্তা দূর হয়
- রিজিকে বরকত হয়
- দুনিয়ার সফলতা
- আখিরাতের সফলতা
কিভাবে করতে হয় ?
নামাযের সময় পড়তে পারেন সালাম ফিরানোর পর। অথবা যখন মনে হবে তখনি পড়বেন হতে পারে কাজের সময় , রাস্তায় হাঁটার সময় , কোন কিছুর জন্য অপেক্ষা করছেন , বসে গান না শুনে ইস্তেগফার পড়তে পারেন। এর দোয়া বিভিন্ন ভাবে পড়তে পারেন। ৩টি দোয়ার মধ্যে নিজের মতো করে যেকোন একটা পড়তে পারেন।
দোয়া ১
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হ।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
প্রতি ওয়াক্তের ফরয সালাতে সালাম ফিরানোর পর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দোয়া ৩ বার পড়তেন। [মিশকাত-৯৬১] এছাড়াও সারাক্ষণ টয়লেট বাথরুম ছাড়া এই ইস্তেগফার টি পড়ে জিহবা ভিজিয়ে রাখুন এর ফজিলত অনেক বেশি।
দোয়া ২
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হা ওয়া আতূবু ইলাইহি।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর দিকে ফিরে আসছি।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তাওবা ও ইসতিগফার করতেন। [বুখারী-৬৩০৭]
দোয়া ৩
(সাইয়েদুল ইস্তিগফার-বা আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার শ্রেষ্ঠ দুআ:*
সায়্যিদুল ইস্তেগফার সব চেয়ে শ্রেষ্ট ইস্তেগফার। এবং এটি সকাল সন্ধ্যার জিকির।
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানী ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আহ্দিকা
ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আ’উযুবিকা মিন শার্রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আ’লাইয়্যা
ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্ফির্লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্যুনূবা ইল্লা আনতা
অনুবাদঃ হে আল্লাহ তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে মাফ করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।
ফজিলত:
এই দোয়া সকালে পড়ে রাতের আগে মারা গেলে অথবা রাতে পড়ে সকালের আগে মারা গেলে সে জান্নাতে যাবে। [বুখারী-৬৩০৬]
এই দোয়া গুলো পড়ার মাধ্যমে ইস্তেগফার করুন। তবে সব চেয়ে উত্তম হলো সায়্যিদুল ইস্তেগফার।
Add Comment