সম্পর্কের যত্ন নেয়া খুবেই জুরুরী । প্রত্যেকটা মানুষ আমরা কোনো না কোনো সম্পর্কে জড়িত । আমাদের যত আত্মবিশ্বাস , কিছু করার তাড়া , ভালো থাকা , খারাপ থাকা , এই সব কিছুই একটা সম্পর্কের উপর নির্ভর করে । কিন্তু খুবেই অদ্ভুত ব্যাপার হলো , আমরা এই সম্পর্কের যত্ন নিতেই ভুলে যাই । অথবা কখনো কারো নেয়াই হয় না । আমি আজকে শুধুমাত্র দাম্পত্যের কথা বলবো। আমরা যদি একটু সহানুভূতিশীল হই একজন আরেক জনের প্রতি , তাহলে বিবাহিত জীবনটা অশাধারন। এই কাজটা সম্পুন্ন করতে মোটেও টাকা পয়সা লাগে না । অথবা লাগে না কোন পরিশ্রম । শুধু দরকার একজন আরেকজনের প্রতি যত্নশীল হওয়া।
তবে হ্যা , কখনোই এইটা হতে পারবেন না যদি অপরজনের প্রতি ভালোবাসা না থাকে। এইটা খুবেই জরুরী একটা বিষয় যার বিকল্প কিছুই নেই। আমাদের মধ্যে যত ভালোবাসা কমছে ততই বাড়ছে নষ্টামি। যখন নিজের মধ্যে ভালোবাসার কমতি থাকে ঠিক তখনি আমরা আরেক জনকে গুরুত্ব দেই না। কারনটা হল তার ভালো অথবা খারাপ থাকাতে আমার কিছু আসে যায় না। আর ভিতরে যদি ভালোবাসা কাজ করে তাহলে গুরুত্ব নিতে গিয়ে কখনোই হিসেব করব না। পাশে থাকা মানুষটির বড় কোন রোগের ব্যথা নয় ,সামান্য হাচিতেও বুকের ভিতর কেঁপে উঠবে।
এখন প্রশ্ন টা হল কিভাবে যত্ন নিব ?
খোঁজখবর নেওয়া :
অফিস সামলানো কিংবা ঘরের কাজ করা কোনোটাই কারো জন্য খুব সহজ ব্যাপার নয়। আমাদের দুজনে দুই জায়গা থেকে কঠিন কাজ গুলিকে সামাল দিতে হয়। এর মাঝে দুজন দুজনের খোঁজ রাখতে হবে। হতে পারে একটা ম্যাসেজ। একটা ফোন। অথবা সন্ধ্যায় দুজনে একটু গল্প করা। এই গল্পের মাঝে দুজন কেই ভালো বক্তা এবং শ্রোতা হতে হবে। গল্পের মাঝে থাকবে কর্তার কর্ম স্থলের কথা, গৃহিণীর সংসারের খুঁটি নাটি আলাপ। ঠিক এই জায়গা থেকে সৃষ্টি হবে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ । এই জায়গা থেকে দুজনের বোধ গম্য হবে , দুজন দুজনের জীবনে কতটা গুরুত্ব পূর্ণ। শুরু হলো একে অপরকে গুরুত্ব দেয়া। তখনি মন আপনাকে তাড়া দিবে কিভাবে আমি তাকে যত্ন নিতে পারি।
বোঝাপড়া:
আমি জানি তুমি সবসময় ভালো রান্না করো , আজকে একটু লবন বেশি হয়ে গেছে। এইটা কোনো বিষয় না। বাড়ির কর্তার পক্ষে কথাটা বলা কি খুব বেশি কঠিন ? আমার শরীর টা আজকে ভালো লাগছে না , তুমি সকালের নাস্তা করে নাও। কথাটাকে খুবেই স্বাভাবিক নেওয়া কি অসম্ভব ? একদমেই না। একটু নিজেকে প্রশ্ন করি , এতটুকু আমরা করি। অপর দিকে যদি একদিন অফিস থেকে বাসায় আসতে দেরি হলো। তোমার কোনো সমস্যা হয় নিতো ? দেরি হলো যে , অফিসে কি কোনো ঝামেলা। একটু শান্ত হয়ে কথা গুলি বলতে পারা কি যাবে না। যদি বলি তার মানে হলো , আমি সম্পর্কের যত্ন নিলাম। একজন আর একজনকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। তবে অবশ্যই সময় থাকতে।
অর্থাৎ আপনি অর্থ উপার্জনের পিছনে ছুটতে গিয়ে কখনো খেয়ালি করলেন না , কতদিন ভাত নিয়ে বসেছিল কাছের মানুষটি। যখন সময় এলো হুইল চেয়ারে বসার তখন হিসেব করে লাভ হৰে না। যে শুধু একসাথে একবেলা খেতে চেয়েছে ঠিক সেই মানুষটি দিনের পর দিন অবহেলার কারনে বেহেস্তেও আপনাকে সঙ্গী হিসাবে পেতে চাইবে না।
হিসাব নিকাশ:
মাসে একদিন অথবা ছয় মাসে না হলে বছরে একদিন কোনো একটা দিনকে উছিলা করে একান্তে সময় কাটানো খুব দরকার। হতে পারে জন্ম দিন , বিবাহ বার্ষিকী অথবা অন্য কিছু। এতটুকু হিসাব নিকাশ সংসার জীবনে থাকতেই হবে। আমরা যখন দীর্ঘ পথ যাত্রা করি , তখন আয়োজন করতে হয়ে খাবার , বিনোদন , মাথায় আরও অনেক কিছু রাখতে হয়ে। একেই ভাবে বিবাহিত জীবন একটা দীর্ঘ পথ যাত্রা করা। ক্লান্তি আসতেই পারে। কিন্তু পুনরায় শক্তি জোগাড় করতে কিছু আয়োজনের হিসাব নিকাশ করতেই হবে।
দাম্পত্যে কলহ কেন আসবে ? যদি দুটি মানুষ পরস্পরকে ভালোবাসি। সম্পর্ক কেন ফিকে হবে যদি দুজনকে বুজতে পারি। আসলে কি বিষয় গুলি অসম্ভব ? না। কখনো না। শুধু আমাদের মনোযোগের অভাব। বিবাহিত জীবন আসলেই অশাধারন। এই সুন্দর সম্পর্কটাকে আসেন ভালো রাখতে শিখি।
[…] সম্পর্কের যত্ন নেয়া খুবেই জুরুরী। […]