গোপন কিছু কথা ,কিছু বিষয় ,কিছু ঘটনা আসলে গোপন থাকাই ভালো অথবা বলা যেতে পারে মঙ্গোল। স্বামীর সাথে কিছু বিষয় অমিল থাকাটা খুবি স্বাভাবিক ব্যাপার।
আবার বোঝাপড়া ভালো হলে দুজনে একসাথে ,কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলাটাও অসম্ভব কিছু নয়।
আমাদের মাঝে অনেকেই আছে, স্বামীর সাথে সামান্য কিছু হলেই কাছের কোনো মানুষের সাথে শেয়ার করি। বিষয়টা আমার কাছে একেবারেই ইতিবাচক মনে হয় না।
তবে হ্যা ,
এই কথাটা সত্য ,কাছের বন্ধুর কাছে শেয়ার করলে ,মন অনেক হালকা হয়।
কি শেয়ার করবো আর কি করা উচিৎ নয় তা ভাবা দরকার। আমি শুধুমাত্র যে বিষয় নিয়ে বলবো তা হলো ,স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য।
দুজনের মধ্যে যদি কোনো বিষয় নিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়ন শুরু হয়
তাহলে এই বিষয় ,কাছের কোনো বন্ধুর সাথে শেয়ার করা উচিৎ নয়।
সম্পর্কের উথান-পথন :
স্বামী- স্ত্রীর সম্পর্ক একটু মনোমালিন্য হতেই পারে। ভালো খারাপ , একটু ভুলবোঝা বুঝি ,খুবি স্বাভাবিক ব্যাপার।
আরও বাস্তব সত্য হলো , দিন শেষে আমরা আবার হাসি মুখে কথা বলবো।
কিন্তু আমি যার সাথে খারাপ লাগার বিষয় গুলি শেয়ার করলাম তার মনে আজীবন একটা নেগেটিভ ইমেজ তৈরী হবে।
এতে তার মনে সঙ্গী সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হতে থাকে।ভবিষতে সত্যি কোনো সমস্যা নিয়ে আলোচনা করলে ,পসিটিভ সারা নাও পেতে পারি।
যুদ্ধটা শুধুই দুজনের :
আমি মনে করি এই যুদ্ধ শুধু মাত্র দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিৎ। যখন কোনো বিষয় নিয়ে তার সাথে আমার মন খারাপ হলো।
তখন এই খারাপ লাগার বিষয় খুব স্পষ্টভাবে তার সাথেই খোলামেলা আলোচনা করা উচিৎ।
কারন স্বামীর যে ব্যবহারে আমি কষ্ট পেয়ে যাচ্ছি । যদি আমি ওই বিষয় টা তাঁর সাথে আলোচনা করি তাহলে এর কারন সম্পর্কে আমি ক্লিয়ার থাকবো।
এখানে দ্বিধার কোনো অপসন থাকবে না। আর এর কারন দুইটা হতে পারে প্রথমত সে না বুঝেই এমন করছে।
হয়তো সে বুজতেই পারে নি যে তার এই ব্যবহার কাউকে এতো কষ্ট দিচ্ছে। দ্বিতীয় কারন হতে পারে শ্ৰদ্ধাবোধ কম।
সে আসলে ভুরুক্ষেপ করে না। এবং নিজেকে শোধরাতেও চাই না। তাতে আমি কষ্ট পেলে পেলাম।
বোকামি এবং অযোক্তিক :
আমি যে মানুষটার সাথে থাকছি। রাতে একসাথে ঘুমাতে যাই , এক সাথে খাই। একেই মুখ প্রতিদিন দেখছি। যার নিঃশাসটাও আমার পরিচিত।
এবং তার সাথেই কিছু বিষয় নিয়ে কষ্ট পেয়ে যাচ্ছি ।
সেই ব্যক্তির সাথে শেয়ার করার পরও যদি সেই না বোঝে অথবা মিথ্যা বলে। অথবা বিষয় টা আমলেই না নেয় তাহলে এই পৃথিবীতে আর এমন কে আছে যাকে বোঝাতে পারবো।
রাগ ,ক্ষোভ,জেদ অথবা অপছন্দের মানুষ হতেও কিন্তু সময় লাগে, লাগে তার দিনের পর দিন অবহেলা ,ভালোবাসার অভাব , যত্নের অভাব,
এই বিষয় যখন দিনের দিনের পর দিন পাওয়া যায় তখনি মনের কোনায় উঁকি মারে কষ্ট, শুরু হয় সম্পর্কের টানাপোড়ন।
তাই আমি মনে করি, ধৈর্য নিয়ে নিজের সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করাই ভালো।
খোলামেলা মেলা আলোচনা করে যা বুজতে পারবেন ,একটু সময় নিয়ে ,একটা নির্দিষ্ট সময় পরে নিজেকে কীভাবে সামলাতে হবে, তা নিজেরই শিখে নেওয়া উচিত।
কেন আমি গোপন রাখবো :
আমি যদি আমার পরিবারের কাউকে বলি তারা সবাই আমার কথা ভেবে কষ্ট পাবে। এমনও হতে পারে তারা যে নেতিবাচক চিন্তা করে কষ্ট পাবে ,
ব্যাপারটা আসলে এতো বড় করে দেখারও কিছু নয়।
আমি যদি শশুর বাড়ির কারো সাথে শেয়ার করি তাহলে দিন শেষে আমাকেই শুনতে হবে , আমার ধৈর্য কম আমরা চিনি আমাদের ছেলেকে , আমি খারাপ বউ হবো।
আর বন্ধু বান্ধব এর কথা যদি বলি তাহলেতো বলবো সম্পর্ক যতই ভালো হোক কিছু বিষয় আছে, যা খুব বেশি ঘনিষ্ঠ হলেও হুট করে বলে ফেলা ঠিক নয়।
জীবনে অনেক দুঃসময় আসতে পারে। বন্ধুকে বললে হয়তো অনেক সময় হালকা হওয়া যায়।
কিন্তু সব ঘটনাই বন্ধুকে জানাতে হবে—এমন কথা নেই। খারাপ সময়ের কথা অন্যকে বলতে গিয়ে আরও বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
দাম্পত্য কলহ :
দাম্পত্য জীবনে কলহ থাকতেই পারে। সমস্যাগুলো নিয়ে নিজেদের সমাধানের পথে হাঁটা উচিত।
মাঝখানে অন্য কাউকে টেনে আনলে তাতে ঝামেলা বাড়ে। কোনো সন্দেহ বা উদ্বেগ তৈরি হলে ঘনিষ্ঠ কারও কাছে সে বিষয়ে শুনে নিতে পারেন, তবে বিষয়টিতে ভারসাম্য রাখতে হবে।
দাম্পত্য সম্পর্কের বিস্তারিত অন্যদের কাছে না বলাই ভালো। ব্যক্তিগত জীবন ব্যক্তিগত পর্যায়েই রাখুন।
আসলে একজন মানুষ হতে পারে বন্ধু হিসাবে খুব ভালো , ছেলে হিসাবে অতুলনীয়। ভাই বলতে খুবি ওবিডিয়ান্ট। বাবা হিসাবে একজন আইকন।
কিন্তু সেই মানুষটাই যে স্বামী হিসাবে ভালো হবে তেমন কোনো যুক্তি নেই। কারন প্রত্যেকটা মানুষের ,অথবা প্রত্যেকটা সম্পর্কের চাহিদা ,
আবদার ,কিংবা দায়িত্ব কর্তব্য আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। পৃথক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
তাই আমার কাছে মনে যে কার কাছে শেয়ার করবো তার সাথে মনোমালিন্যের কথা যে কিনা বন্ধু বলতে অন্ধ ,ছেলে হিসাবে বাধ্য , অন্যান সকল সম্পর্কে সে এক কোথায় ভালো ছেলে।
অনেকেই বলতেই পারেন তাহলে স্বামী হিসাবে কেন খারাপ হবে ? স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এমন কিছু বিষয় থাকে যা অনেক মনোযোগ ,
আর ভালোবাসার সাথে পূর্ণ করতে হয়।
টাকা দিয়ে তা কখনোই দায়িত্ব পালন করা যায় না। মাস শেষে দিলেন হাত খরচের টাকা। দামি শাড়ি গহনা।
অথচ সেই ঘরের বৌ বিছানার পাশে শুয়ে ,প্রচন্ড মাথা ব্যাথায় কাতড়ালো আপনি খেয়ালও করলেন না।
গোপন কথা গোপন থাক:
প্রচন্ড জ্বরে আজ তিনদিন থেকে ,শুয়ে বসে দিন চলে যায় ,আপনি বলারও সময় পাবেন না।
কেমন আছো ? ওষুধের কথা না বললে , ওষুধও আসবেনা। তাহলে তো সেই সম্পর্কের চিড় ধরবেই।
যে কারনেই ফাঁটল ধরুক যুদ্ধ দুজনের। কিভাবে ভালো থাকা যায় এই চিন্তা একান্তই নিজের। পথ খুঁজে নিতে হবে।
সেটাও চিন্তা করতে হবে যে , কাকে কার কাছে কিভাবে বললে আমি ইতিবাচক সারা পাবো। কিভাবে সম্পর্ক ভালো রাখতে পারবো সেই চিন্তা নিজেকেই নিতে হবে।
নিজেই সামলানোর চেষ্টা করা উচিত । মনে রাখতে হবে, কোনো সম্পর্কই নিখুঁত নয়। ব্যক্তিগত সমস্যা নিজেদেরই মিটিয়ে নেওয়া ভালো।
অন্যের কাছে সমাধান চাইতে গেলে সম্পর্কের বিরুদ্ধে বাজে বা নেতিবাচক কথা শুনতে হতে পারে। এতে নিজের কাছে খারাপ লাগবে।
তাই ব্যক্তিগত বিষয় ব্যক্তিগত থাকলেই ভালো।
সম্পর্কের যত্ন নেয়া খুবেই জুরুরী।
Add Comment