কেন খাবারের পরিকল্পনা করবো ?
আমি আসলে তিনটা করনে পরিকল্পনা করি। সেগুলি আলোচনা করি।
টাকা বাঁচে : আপনি যদি ঠিক ভাবে পরিকল্পনা করতে পারেন তাহলে দেখবেন মাস শেষে টাকা সেভ হবে। প্রশ্ন হলো কিভাবে ? বাজারের লিস্ট যদি না থাকে তাহলে আমি দেখেছি প্ৰায়েই সবজি পচে যেত। প্রতিদিন একটা পটল ,আলু ,বেগুন কিছু না কিছু ডাস্টবিনে যেত। কারন একটাই পরিকল্পনা ছাড়া বাজার ,প্লান ছাড়া ফ্রিজে রেখে দেওয়া।
সময় বাঁচে : আর কারো এমন হয় কিনা জানি না তবে আমার এই সমস্যা আছে। প্রতিদিন ভাবতাম আজ কি রান্না করবো। প্লান করতেই অনেক সময় নষ্ট। ফ্রিজ খুলে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকি ,আবার সবজি বের করে কিছুক্ষন ভাবি। খেতে মন না চাইলেও দেখা যায় কিছু নষ্ট হয়ে যাবে তাই আগে রান্না করতে হবে। এই সমস্যা থেকে আমি মুক্ত।
মানুসিক চাপ থেকে মুক্তি : রান্নার মেনু প্লান করলে মানুসিক চাপ থেকে মুক্তি মেলে। স্বামীকে বললাম সবজির নাম। লিস্ট অনুযায়ী কর্তা সব কিছুই আনলো। ঐসব দেখতাম আর ভাবতাম কোন সবজির সাথে ,কোনটা রান্না করলে ভালো হবে। কোন রেসিপি সবাই ভালো বেশে খাবে। কিভাবে রান্না করবো। এইসব আমার কাছে এক বিরাট মানুসিক চাপ মনে হতো। কিন্তু খাবারের মেনু প্লান করে আমি দেখেছি, এইসব থেকে মুক্ত থাকা যায়।
কিভাবে প্লান করবো ?
সবজি কেনার আগে কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে।
১. পরিবারের সদস্য কতজন ?
২. কোন কোন সবজি পরিবারের সদস্য যেভাবেই রান্না করেন না কেন খাবে না।
৩. আপনার পরিবারে সবজি সপ্তাহে কতদিন রান্না হয়।
উপরের কথা গুলো মাথায় রেখে সবজি কিনতে হবে। তারপর ফরমালিন মুক্ত করার জন্য কিছুক্ষন পানিতে ভিজিয়ে রেখে নিজের রেসিপি প্লান মতো কাটতে হবে। শাক সেদ্ধ করে বাটিতে করে রেখে দিতে হবে। আর একটু শক্ত যে সবজি যেমন মুলা ,গাজর ,করল্লা ,ক্যাপসিকাম ,চিচিঙ্গা হালকা সেদ্ধ করে ফ্রিজে রাখতে হবে। হালকা সেদ্ধ বলতে ১০%. পানিতে দিয়ে পানির একটা বলোক আসলেই নামিয়ে ফেলতে হবে। এতে করে সবজির রং অক্ষুন্ন থাকে।
সাপ্তাহিক মেনুর পরিকল্পনা করতে লাগবে
- ডাইরী নোট করার জন্য
- কলম লেখার জন্য
- রেসিপি লিস্ট অর্থাৎ শনি থেকে শুক্র কবে কি রান্না করতে চান সেটার লিস্ট।
- কেনাকাটা লিস্ট। রেসিপি ঠিক করতে পারলে কেনাকাটার লিস্ট বানানো অনেক সহজ হয়ে যাবে।
এইভাবে কি পুষ্টি গুন ঠিক থাকবে ?
আমার কথা হলো , যে ভাবে খেলে আমরা ঠিক মতো পুষ্টি পাবো , আসলে কি আমরা সেই ভাবে খাই ? আমরা বাঙালী রান্না করার কমন পদ্ধতি হলো কেটে ধুয়ে ,মশলা দিয়ে , ভালোভাবে সেদ্ধ করে রান্না করা। কিন্তু বাস্তবতা হলো , সবজি ভালো ভাবে ধুয়ে ,তারপর কাটতে হয়। তারপর কম মশলা দিয়ে আধা সেদ্ধ করে রান্না করতে হয়। যাই হোক আমার কথা হলো , আমি যে ভাবে রেখেছি , তাতে করে পুষ্টি গুন্ অক্ষত থাকবে।
কিভাবে রেখেছি ?
সবজি পানিতে ভিজিয়ে রেখেছি ১৫ মিনিট। যাতে ফরমালিন মুক্ত হয়। তারপর ভালো ভাবে ধুয়ে। টুকরা করে কেটে সেদ্ধ করেছি। আমার যেদিন যতটুকু সবজি লাগবে ঠিক ততটুকু একটা বক্সে করে নরমাল ফ্রিজে রেখে দিয়েছি। বছরজুড়ে শীতের সবজি নাম এর একটা টাইটেলে প্রথম আলোতে পড়েছিলাম সবজি এইভাবে রাখলে কোনো সমস্যা নেই। যেখানে বছরের কথা বলা হয়েছে , সেখানে আমি এক সপ্তাহের জন্য রেখেছি। সুতারাং সমস্যা হবার প্রশ্নই আসে না।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেহানা বেগম। অল্প পানি দিয়ে সবজি সেদ্ধ করলে খাদ্যের গুণাগুণ বজায় থাকবে। এয়ার টাইট বক্সে বা প্যাকেটে একবার রান্না করতে যতটুকু সবজি প্রয়োজন, ততটুকু রাখা ভালো। অর্থাৎ ছোট ছোট বক্সে রাখা হলে দীর্ঘদিন ভালো থাকবে। এ ছাড়া সংরক্ষণের জন্য কেনা সবজি ভালো এবং তাজা দেখে কেনার পরামর্শ দেন তিনি।
পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো জানান, শীতের সবজি অনেক দিন পর্যন্ত রেখে খাওয়া সম্ভব। তবে খুব বেশি সেদ্ধ না করে ভাপ দিয়ে রাখতে হবে। এতে পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে।
সূত্র : প্রথম আলো
Add Comment