সফল মানুষের অভ্যাস আর ব্যর্থ মানুষেরা চালচলন অভ্যাস সম্পূর্ণ আলাদা। যারা জীবনে সফলতা অর্জন করেছেন তারাই একটা নির্দিষ্ট রুটিন মেপে চলেন।
জীবনে প্ল্যান পরিকল্পনা ছাড়া চলা অর্থই হলো জীবনকে গুরুত্ব না দেয়া।
এমন একজন সফল ব্যাক্তি হলেন হল এলরোড। তিনি বলেছেন যারা সফল হতে চান সকালে ৬টা বিষয় মেনে চলতে হবে।
Hal Elrod হলেন ” The Miracle of Morning ” বইটির লেখক। মানুষের জীবনে ইতিবাচক চিন্তা যে কি কাজে লাগে তা এই বইটা না পড়লে জানতে পারতাম না।
Hal Elrod একদিন স্পীচ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ তার খুব মারাত্নক এক্সিডেন্ট হয়।
কিভাবে বড়লোক হবেন ? জানতে পড়ুন
৬ মিনিটের জন্য তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, মানে হলো ৬ মিনিটের জন্য তিনি মারা গিয়েছিলেন।
শরীরের ১১ টি হাড় ভেঙ্গে যায় এবং ৬ দিন তিনি কোমাতে ছিলেন।
ডাক্তাররা তাকে বলেন উনি আর কোনদিন হাঁটতে পারবেন না এবং তার ব্রেনও ড্যামেজ হয়ে গেছে ।
উনি মাত্র ৫ মিনিট নেতিবাচক চিন্তা করেন। মানুসিক ভাবে ভেঙে যান। তারপর নিজে নিজে ভাবতে থাকেন ইতিবাচক চিন্তা।
আমার কি করার আছে।
ইতিবাচক চিন্তা
যা হয়েছে তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করে লাভ নেই। আমার কি করার আছে। আমি দুটা কাজ করতে পারি , যদি ডাক্তার যা বলছে তা সত্যি হয়,
তাহলে আমি এই হুইল চেয়ারে বসে প্রমান করবো আমি একজন সুখী মানুষ।
অথবা ডাক্তার যা বলছে সেটা আমি ভুল প্রমান করবো।
এই ইতিবাচক চিন্তাগুলোই তার নেতিবাচক চিন্তাগুলোকে মন থেকে সরিয়ে দেয় । তার এই ইতিবাচক চিন্তার ফলে তার স্বাস্থ্য খুব তাড়াতাড়ি ভালো হতে থাকে ,
যা ডাক্তারদেরকেও অবাক করে।
ঐ এক্সিডেন্টের কিছু বছর পর তিনি একজন স্পিকার , বেস্ট সেলিং অথার এবং আলট্রা ম্যারাথন রানার । যাকে বলা হয়েছিল কোনদিন হাঁটতেও পারবেন না,
সে ম্যারাথন রানার। শুধু মাত্র একটা ইতিবাচক চিন্তা করার কারনে ।
তিনি বিভিন্ন বই পড়তে শুরু করলেন। সেখান থেকে নিজের মধ্যে কয়েকটা অভ্যাস তৈরী করলেন। যে অভ্যাস গুলি ওনাকে এই পর্যায়ে আনতে সাহায্য করেছিল।
Hal Elrod বলেন – এর জন্য আপনাকে সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে ।
সকালে যে তাড়াতাড়ি উঠে তার কাছে প্রচুর সময় থাকে তার কাজগুলো করার জন্য এবং ভালো morning rituals ব্রেন এবং মাইন্ডকে প্রশিক্ষন দেয়।
সফল মানুষের অভ্যাস:
Hal Elrod কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কিভাবে সম্ভব করলো এইটা। শুধুমাত্র ৬ টি সকালের অভ্যাস তৈরি করেছিলেন।
সেই বিষয়টা এই বইটাতে তুলে ধরেছেন।
এই ৬টি বিষয় এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো S.A.V.E.R.S .
যার অর্থ হলো Silence ,Afrmations , Visualization , Exercise , Reading , Scribing .
১। Silence :
Silence অর্থাৎ মেডিটেশন বা প্রার্থনা । প্রথম কাজটা হলো ঘুম থেকে উঠে প্রার্থনা করতে হবে। প্রার্থনা মানুষের মনকে শান্ত রাখে। অশান্ত মন অথবা অস্থির চিন্তা কোনোদিন ভালো কিছু ফলাফল দেয় না।সফল মানুষেরা দিনের শুরু করে মেডিটেশন বা প্রার্থনা দিয়ে ।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে , মেডিটেশন সফলতা লাভে সব চেয়ে বেশি সাহায্য করে ।
এইজন্য প্রথম অভ্যাস প্রার্থনা করা বা মেডিটেশন চর্চা করা ।
২। Affirmations :
এই টা খুবি গুরুত্বপূর্ণ যা প্রত্যেক সফল ব্যক্তি ব্যবহার করে থাকেন । Affirmations হচ্ছে একটি ইতিবাচক বাক্য বারবার নিজেকে বলা ,
যার ফলে সেই বাক্যটি আমাদের সাব কন্সিয়াস মাইন্ডে গেঁথে যেতে থাকে , বাস্তবেও আমরা নিজেকে তাই ভাবতে থাকি।
যেমন ধরুন আপনি যদি কোন কাজের শুরুতে নিজেকে বারবার বলতে থাকেন আমি পারবো , আমি পারবো তাহলে বাস্তবেও আপনি কাজটি পারবেন ।
এইটা হলো আমাদের মনকে সেট করা। বার বার ইতিবাচক কথা বলে বিশ্বাস করানো যে আমি পারবো।
৩। Visualization :
Visualization হলো মনের চোখ দিয়ে দেখা। ধরুন আপনি অনেক বড়োলোক হতে চাইছেন। এখন বড়োলোক হলে আপনি কি কি বিষয় , নিজের মধ্যে পরিবর্তন দেখতে চান। সেই বিষয় গুলি ভাবা এবং মনে মনে দেখা।
Affirmation এ আপনি নিজেকে বারবার নিজেকে ইতিবাচক বাক্য বলবেন ,
Visualization এ আপনার মস্তিষ্কে এমন কিছু জিনিস তৈরি করতে হবে যা জীবনে অর্জন করতে চান ।
৪। Exercise :
Exercise বা ব্যায়াম অনেক বেশি উপকারী । নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে আপনার মস্তিষ্কে অক্সিজেন বেড়ে যায় , এনার্জি লেভেল বেড়ে যায় ।
এগুলো করার জন্য আপনার জিমে যাওয়ার দরকার নেই ,
সকালে ছোট ছোট ব্যায়াম করেই এই উপকারিতা পেতে পারেন ।
অথবা আমার মনে হয় ঘরের কাজ বা নিজের কাজ নিজেই করতে পারেন।
৫। Reading :
Reading বলতে লেখক বুঝিয়েছেন কোনো মোটিভেশনাল বই পড়তে ।অথবা Self improvement বই পড়তে বলেছেন , যা আপনার চিন্তাশক্তি , স্কিলস, বুদ্ধিমত্তা বাড়িয়ে তুলবে । পৃথিবীর সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি বিল গেটস প্রতি সপ্তাহে একটি বই পড়েন ।
সুতরাং এটিও প্রয়োজনীয় অভ্যাস সফলতা অর্জনে।
৫। Scribe :
Scribe মানে হচ্ছে লিখে রাখা অর্থাৎ আপনার লক্ষ্যগুলো প্রতিদিন লিখে রাখবেন। সবসময় নিজের সাথ্য একটি নোট বুক রাখুন এবং আইডিয়া , চিন্তাগুলো লিখে রাখুন । একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা তাদের গোলগুলো লিখে রেখেছেন তারাই বেশি সফল হতে পেরেছেন।
[…] […]